বিষয়বস্তুতে চলুন

সুইজারল্যান্ডের ইতিহাস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

সুইজারল্যান্ডের ইতিহাস ১৮৪৮ সালে সুইস কনফেডারেশন প্রতিষ্ঠার পর থেকে সুইজারল্যান্ডের ঘটনাবলি বিবৃত করে। ১৮৪৮ সাল থেকে সুইস কনফেডারেশন সায়ত্ত্বশাসিত ক্যান্টনের ফেডারেল প্রজাতন্ত্র ছিল, এর মধ্যে কিছু কনফেডারেসি ৭০০ বছরের অধিক পুরনো ছিল। ফলে এটি এখনো বিদ্যমান বিশ্বের প্রাচীনতম কনফেডারেসির একটি।

এই অঞ্চলের প্রারম্ভিক ইতিহাস আলপাইন সংস্কৃতির সাথে সম্পর্কিত। হেলভেট্টি জাতি সুইজারল্যান্ডে বসবাস করত। দেশটি খ্রিষ্টপূর্ব ১ম সহস্রাব্দে রোমান শাসনের অধীনে আসে। ধ্রুপদী সভ্যতার শেষভাগে গ্যালো সংস্কৃতি জার্মান প্রভাবে প্রভাবিত হয় এবং সুইজারল্যান্ডের পূর্ব অংশ আলেমানিক ভূখণ্ডের অংশ হয়। ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে সুইজারল্যান্ড এলাকাটি ফ্রানকিস সাম্রাজ্যের সাথে যুক্ত হয়। মধ্যযুগের মধ্যবর্তী সময়ে পূর্ব অংশটি পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের সোয়াবিয়া ডিউকশাসিত এলাকা এবং পশ্চিম অংশটি বুরগুন্ডির অংশ হয়।

প্রারম্ভিক ইতিহাস

[সম্পাদনা]

প্রাক-ইতিহাস

[সম্পাদনা]

প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে ১৫০,০০০ বছর পূর্বে মধ্য পুরা প্রস্তর যুগে শিকার-সংগ্রহকারীরা আল্পস পর্বতের উত্তরের নিম্নভূমিতে বসবাস করত।[] নব্য প্রস্তর যুগে এই এলাকাটি গণবসতিপূর্ণ হয়ে ওঠে। আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ৩৮০০ অব্দের ব্রোঞ্জ যুগের পাইল বসবাসকারীদের অবশিষ্টাংশ অনেক হ্রদ এলাকায় পাওয়া যায়।[] খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ অব্দের দিকে কেল্টীয় আদিবাসীরা এই এলাকায় বসবাস করত। রেটীয় জাতি পূর্ব অঞ্চলে এবং হেলভেট্টি জাতি পশ্চিম অঞ্চলে বাস করত।

২০১৭ সালের মার্চ মাসে আউসের্সিলে কার্ন স্কুল কমপ্লেক্সের জন্য নির্মাণ প্রকল্পের খোদাই কাজের সময়ে একটি গাছের ট্রাঙ্ক থেকে আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ২০০ অব্দের একজন মহিলার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রত্নতত্ত্ববিদগণ জানান যে মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল আনুমানিক ৪০ বছর এবং জীবিত অবস্থায় শারীরিক পরিশ্রম করতেন। মহিলাটির সাথে ভেড়ার চামড়ার কোট, বেল্টের চেইন, পশমের পোশাক, একটি ওড়না, একটি দোদুল্যমান কাচ ও হলদে পাথরের তসবিহ আবিষ্কৃত হয়।[][][]

মধ্যযুগ

[সম্পাদনা]

ক্যারোলিঞ্জীয় রাজাদের অধীনে সামন্তবাদ বিকশিত হয় এবং রাজতন্ত্র ও বিশপদের রাজত্ব শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করত। ৮৪৩ সালে বুরগুন্ডি ও লোথারিঞ্জিয়ার মধ্যে এবং আলেমানিয়া ও জার্মান লুইসের পূর্ব রাজ্যের মধ্যে ভেরডুন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

১০ম শতাব্দীতে ক্যারোলিঞ্জীয়দের প্রভাব হ্রাস পায় এবং ম্যাগিয়াররা ৯১৭ সালে বাসেল ও ৯২৬ সালে সেন্ট গ্যালেন ধ্বংস করে।

আধুনিক সুইজারল্যান্ড

[সম্পাদনা]

শিল্পায়ন

[সম্পাদনা]

গৃহযুদ্ধের ফলে সুইজারল্যান্ডে ১৮৪৮ সালে ফেডারেল সংবিধান গ্রহণ করে। ১৮৭৪ সালে এতে ব্যাপক সংশোধন আনা হয় এবং প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, ও আইনি বিষয়ে ফেডারেল সরকারে উপর ও অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে ক্যান্টোনাল সরকারের উপর দায়ভার ন্যস্ত করা হয়। তখন থেকে ২০শ শতাব্দীর অধিকাংশ সময়ে সুইস ইতিহাসে ধারাবাহিকভাবে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রবৃদ্ধি এসেছে।

সুইজারল্যান্ড মূলত গ্রামীণ এলাকা হলেও ১৯শ শতাব্দীর শেষভাগে শহরগুলোতে শিল্প বিপ্লব পূর্ণতা লাভ করে, বিশেষ করে টেক্সটাইল শিল্পে। উদাহরণস্বরূপ, বাসেলে রেশমসহ টেক্সটাইল ছিল অন্যতম প্রধান শিল্প। ১৮৮৮ সালে নারীরা ৪৪% পারিশ্রমিক গ্রহীতা ছিল। অর্ধেকের কাছাকাছি নারী টেক্সটাইল মিলে কাজ করতেন, অন্যদিকে গৃহপরিচারিকা ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মের শাখা। ১৮৯০ থেকে ১৯১০ সালের মধ্যে নারী শ্রমিকের সংখ্যা ১৯৬০-এর দশকের শেষভাগ থেকে ১৯৭০-এর দশকের চেয়ে বেশি ছিল।[]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Switzerland's Prehistory: Stone Age, Lake Dwellings"history-switzerland.geschichte-schweiz.ch। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০২০ 
  2. Julia Slater (সেপ্টেম্বর ১০, ২০০৭)। "Prehistoric find located beneath the waves"swissinfo। জুন ১৬, ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ৩১, ২০২০ 
  3. July 2019, Laura Geggel-Associate Editor 30। "Iron Age Celtic Woman Wearing Fancy Clothes Buried in This 'Tree Coffin' in Switzerland"livescience.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০২০ 
  4. "Kelte trifft Keltin: Ergebnisse zu einem aussergewöhnlichen Grabfund - Stadt Zürich"www.stadt-zuerich.ch (জার্মান ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০২০ 
  5. Solly, Meilan। "This Iron Age Celtic Woman Was Buried in a Hollowed-Out Tree Trunk"Smithsonian Magazine (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০২০ 
  6. Regina Wecker, "Frauenlohnarbeit - Statistik und Wirklichkeit in der Schweiz an der Wende zum 20," Jahrhundert Schweizerische Zeitschrift für Geschichte (1984) 34#3 pp 346-356.

টেমপ্লেট:সুইজারল্যান্ড বিষয়াবলি